― ০৬-জুন-২০১৯১৭৩০ খ্রি. আর্বিভাব ১৮৯০ খ্রি. তিরোভাব সুবিন্তৃত ১৬০ বছরকাল এর মধ্যে ৯০ বছর সাধনকাল।পরবর্তী ৩৩ বছর দেশ মহাদেশ পরিক্রমা অবশিষ্ট ২৬ বছর মহাতীর্থ বারদীধামে জগৎ কল্যাণে নিজেকে উজাড় করে দেব। স্বর্গমুখী বা আত্ম উন্নয়নমুখী সাধু অনেক দেখা যায়। কিন্তু জগৎ কল্যাণমুখী সাধু বিরল। এখানেই অনাথের নাথ লোকনাথ নামের মাধু্র্য। নামের মধেই পরোপকারের ব্রতটি যিনি ধারন করে দীর্ঘ ২৬ বছর বারদীধামে অবস্থান নিয়েছিলেন। ত্যাগ ও সেবার মহিমায় যার জীবন মহিমানিত যোগীরাজ বারদীধামে অবস্থানকালে সন্ধায় আশ্রম বন্ধ হয়ে যেত, কিন্তু বন্ধ হত না মহাযোগী বাবা লোকনাথের আশ্রমে আসা অন্যান্য যোগীদের শিক্ষা মূলক কার্যক্রম। গভীর রাত পর্যন্ত যোগীদের শিক্ষাদান পর্বটি চালিয়ে নিতেন। কঠোর ব্রক্ষ্মচর্য ব্রতের নিয়মাবলি পালনে কোনো আপোষ করেননি। আপোষ করেনি তাই তীব্র কৃচ্ছ্রতা সাধনে। আচরণ ধারন করা সাধনার বিষয়, করুণা ও কৃপার বিষয়।
বাবা লোকনাথ বলেছেন - তোদের অভীষ্ট বা মানত পূরণ হলে মহৎ ব্যক্তি হিসাবে আমাকে মনে করিস। কিন্তু ভবরোগের বিষয়ে কোনো ব্যক্তি আমার নিকটে আসে না। আরোও বলেছেন - "তোরা যখন কর্ম করিস তখন ভালো-মন্দ দুটিই করিস।" মন্দ কর্ম যাতে না করতে হয় সে জন্য দূঢ় প্রতিজ্ঞ হবি। প্রতিদিন নিদ্রা যাবার পূর্বে ভালো মন্দ কাজের হিসাব করে পরদিন যাতে মন্দ কর্ম না করতে হয়। ফলে মন্দ কর্মের পরিবর্তে শুভ কর্ম বৃদ্ধি পাবে। এতে আরো মঙ্গল হবে।
যিনি নিরাশ্রয়কে আশ্রয় দেন, যিনি সর্ব কারণের কারণ, অনন্ত প্রমের সাগর তার অপার মহিমায় হৃদয় প্রেমাপ্লুত হয়েছিল কর্মযোগী অনিল কুমার মুখার্জীর চলার পথ।যার অনুপ্রেরণায় সারা বাংলাদেশ লোকনাথ প্রেমের বন্যায় ভেসে চলেছে ভক্তবৃন্দ। লোকনাথগত প্রাণ অনিল কুমার মুখার্জী বাবা লোকনাথের দর্শন প্রচারের ভগীরথ। প্রতিঘরে লোকনাথ নামের মহিমা প্রচারে নিবেদিত প্রান ছিলেন।অসহায় পরিবারের স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষার আলো পোঁছানোর উদ্দেশ্য ১৯৯২ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ে প্রতিষ্ঠা করেন "লোকনাথ সেবা সংঘ"।ফলে কর্ম জ্ঞান ভক্তি, সেবা ও শান্তির পতাকা তলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তরুণ প্রাণে লোকনাথ দর্শন ছড়িয়ে পড়ে। বারদীধামে ভক্তদের উদ্দেশ্য বাবা ঘোষণা করলেন - তোদের ভগবানের সাথে আমার দেখা হয় নি। আমি দেখেছি আমাকে। আমি বদ্ধ আছি সংসারে, সংসার বদ্ধ আছে কর্মে,কর্ম বদ্ধ আছে জিহ্বা আর উপস্থে, যে এই দুটি সংযম করতে পেরেছে সেই সিদ্ধি লাভ করেছে। জিহ্বা মানে লোভের আশ্রয়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়া। প্রয়োজনের অতিরিক্ত গ্রহণের মানসিকতা। লোভের পূজা না করে ক্ষুধার পূজা করতে বলতেন। চাহিদার সাথে প্রাপ্তি সম্বন্বয় না থাকলে বিকারগ্রস্ত হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।
উপস্থ (লিঙ্গ) বিষয়ে - বাবা বলতেন "ব্রহ্মচর্যই মহাশক্তির মূল উৎস"। এই শক্তিকে আমার অপ্রয়োজনে ব্যবহার করে আত্ম্যহত্যার পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। কামনার আঁধারে মানুষ পশুত্বে রূপান্তর হয়। এর সঠিক ব্যবহারে মানুষ মানবে পরিণত হয়। শ্রীশ্রী গীতার ভাষায় - কামনায় নরকের পথ প্রশস্ত করে। আবার কামের বিনাশে প্রমের আর্বিভাব। সংযম,সুচিতা,সত্যবাদিতা ও পরোপকার ব্রতের প্রবণতা বিষেয় সচেতন হওয়ার প্রচেষ্টা চালানো। ব্যাক্তি কল্যাণে নিবেদিত প্রান ব্যাক্তি সমষ্টি কল্যাণে এগিয়ে যাওয়া, তা হলেই মঙ্গলময়ের কৃপা লাভের পথ সুপ্রসশস্ত হবে সমষ্টি কল্যাণে নিবেদিত প্রাব ব্যক্তি কল্যাণের সোপান। যোগীরাজের ভাবনায়- জীবের প্রার্থবা বা উওয়ানবা মঙ্গলময় গ্রহব করেব। গ্রহন করেন শ্রদ্ধাঞ্জলি এ ভাবেই স্রষ্টার সাথে সৃষ্টির নৈকট্য লাভ হয়।